গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও দূতাবাসে হামলার জবাব দিতে ইরান নিজ ভূখণ্ড থেকে ইসরায়েলে হামলার পরিকল্পনার পাশাপাশি অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীর থেকেও হামলার পরিকল্পনা সাজিয়েছে। এ লক্ষ্যে গত দুই বছর ধরে অঞ্চলটিতে অস্ত্রের বন্যা বইয়ে দিচ্ছে ইরানের গোয়েন্দারা।
এ উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্য গোপন এক চোরাচালান রুটও ব্যবহার করেছে ইরান। মার্কিন গণমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গোপন এ চোরাচালান রুট পরিচালনার জন্য ইরান বেছে নেয় দুর্ধর্ষ আরব বেদুইনদের। ইতিহাসের সুপ্রাচীন কাল থেকেই যুদ্ধ আর সংঘাতের জন্য বেশ প্রসিদ্ধ এসব বেদুইন গোত্র। তাই ইসরায়েলের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মোকাবিলায় বেশ সুদূরপ্রসারী চিন্তার অংশ হিসেবেই এমন ছক কষে ইরানের গোয়েন্দারা। এসব বেদুইনরা ইরানের অস্ত্র জর্ডান হয়ে খোদ ইসরায়েলের ভেতর দিয়ে পশ্চিম তীরে পৌঁছে দেয়।
গেল কয়েক বছর ধরে, ইরানের নেতারা অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের অস্ত্র দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। দীর্ঘকাল ধরেই ইরান ফিলিস্তিনের অন্যান্য অঞ্চলে যোদ্ধাদের কাছে ইসরায়েলে হামলার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করেছে। এর পাশাপাশি সম্মিলিত আক্রমণ করার জন্য পশ্চিম তীরের যোদ্ধাদেরও অস্ত্র সরাবরাহ করার পরিকল্পনা করে তেহরান।
চলতি মাসের শুরুতে দামেস্কের ইরানি দূতাবাসে হামলা চালায় ইসরায়েল। এ ঘটনার কড়া জবাব দেওয়ার হুমকি দেয় তেহরান। তারপর থেকেই ঘুম হারাম হয়ে যায় নেতানিয়াহু প্রশাসনের। ঠিক কীভাবে ইরান হামলা চালাবে তা নিয়ে চলতে থাকে আলোচনা।
যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন কর্মকর্তা ধারণা করছেন, হামলায় ইরান ১০০ ড্রোন ও কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সিবিএস নিউজ জানিয়েছে, ইরান যদি ১০০ ড্রোন ও কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালায় তাহলে এটি ঠেকানো ইসরাইলের জন্য ‘চ্যালেঞ্জিং’ হয়ে যাবে।
ইরানের এমন বড় হামলার শঙ্কার মধ্যে মন্ত্রীদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক ডেকেছেন দখলদার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এদিকে, মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, গত সপ্তাহে ইরান আরব দেশগুলোর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছে, যদি ইসরাইল ও ইরানের মধ্যকার দ্বন্দ্বে যুক্তরাষ্ট্র যোগ দেয় তাহলে মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থিত মার্কিন ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হবে।