অবরুদ্ধ গাজায় দীর্ঘ একমাসের বেশি সময় ধরে চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত প্রায় ১৫ হাজার বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। এমন পরিস্তিতির মধ্যে উপত্যকাটির জন্য নতুন সতর্কবার্তা দিয়েছে জাতিসংঘ। জানিয়েছে ইসরায়েলি বোমার আঘাতে মৃত্যুর চেয়ে বেশি মৃত্যু হতে পারে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে। এমন পরিস্থিতিতে গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা দ্রুত সংস্কারের আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউএইচও এর মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস জানান, অবরুদ্ধ গাজার স্বাস্থ্যব্যবস্থা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে না পারলে বোমার আঘাতের চেয়েও রোগাক্রান্ত হয়ে বেশি মৃত্যুর দৃশ্য দেখতে হবে। ডব্লিউএইচও-এর এ মুখপাত্র উত্তর গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলায় আল-শিফা হাসপাতালের পতনকে একটি ‘ট্র্যাজেডি’ হিসেবে বর্ণনা করেন। এমনকি চলতি মাসের শুরুতে ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা আল-শিফা হাসাপাতলের স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের আটকের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
গেল ৭ অক্টোবর থেকে স্বাধীনতাকামী যোদ্ধাদল হামাসকে নির্মূলে গাজায় নির্বিচার বোমাবর্ষণ করে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। তেলআবিব সেনাদের হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছে না মসজিদ, গির্জা, স্কুল ও হাসাপাতল থেকে শুরু করে বেসামরিক কোনো স্থাপনা। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে গাজায় আন্তর্জাতিক যুদ্ধনীতির সর্বোচ্চ লঙ্ঘন করেছে নেতানিয়াহুর সেনারা। যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্বের নীরবতায় এমন অভিযোগের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানায়, পর্যাপ্ত জ্বালানি ও চিকিৎসা সামগ্রীর সরবরাহ সংকটের কারণে গাজার হাসপাতালগুলো পরিষেবা দেওয়ার সক্ষমতা হারিয়েছে। এ ছাড়াও ইসরায়েলি হামলার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অধিকাংশ হাসপাতালের জরুরি অবকাঠামো। ফলে রোগীদের জরুরি চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হচ্ছেন চিকিৎসকরা। গাজার স্বাস্থ্যসেবার পরিস্তিতি বর্ণনা করতে যেয়ে ডব্লিউএইচও এক প্রতিবেদনে জানায়, সেখানে কোনো ওষুধ, টিকা, বিশুদ্ধ পানি, স্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও সুষম খাদ্য নেই।
অন্যদিকে বিশুদ্ধ পানির অভাবে উপত্যকাটিতে পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছে ডব্লিউএইচও। এমনকি গাজার স্যানিটেশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ফলে কলেরাসহ গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল এবং সংক্রামক রোগগুলো বাড়তে পারে। জাতিসংঘ বলছে, ৪৪ হাজারের বেশি ডায়রিয়া এবং ৭০ হাজারের তীব্র শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ রেকর্ড করেছে। এসব রোগে আক্রান্ত রোগীর প্রকৃত সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি হতে পারে বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্যবিষয়ক