রাজধানীর গুলিস্তানের সুন্দরবন মার্কেটের মূল নকশার বাইরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকান সংখ্যা ৭৫৩টি। এসব অবৈধ দোকান উচ্ছেদে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) অভিযানের দুইদিনে ৩৮০টি দোকান উচ্ছেদ হয়েছে। বৃহস্পতিবার মার্কেটটিতে দ্বিতীয় দিনের অভিযান শেষে এ তথ্য জানিয়েছে দক্ষিণের নগর কর্তৃপক্ষ।
ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামান, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ এইচ এম ইরফান উদ্দিন আহমেদ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিলা কবীর ত্রপা এর নেতৃত্বে সুন্দরবন স্কয়ার সুপার মার্কেটের বেজমেন্টসহ চতুর্পাশ ও এক তলার অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হয়।
অভিযানে করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন এবং অঞ্চল-৪ এর আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা হায়দর আলী উপস্থিত থেকে নির্দেশনা দেন।
ডিএসসিসি জানায়, দুইদিন ৩৮০টি দোকান উচ্ছেদ করা হয়েছে। এরমধ্যে বেজমেন্টে থাকা অধিকাংশ দোকান ভেঙে ফেলা হয়েছে। প্রথম তলায় অবৈধ দোকান ভাঙা হয়েছে ২০টি। পঞ্চম তলায় গড়ে ওঠা সকল দোকান অবৈধ। পঞ্চম তলায় দোকানের সংখ্যা ২৯২টি।
সুন্দরবন মার্কেটে অবৈধ দখল উচ্ছেদ মুক্ত করার পর তা পার্কিং হিসেবে ব্যবহার করার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। দখলমুক্তির পর ইজারার মাধ্যমে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে ডিএসসিসি।
গত ১৭ ডিসেম্বর মার্কেটটির অবৈধ দোকান উচ্ছেদে প্রথমবার অভিযান পরিচালনা করে নগর কর্তৃপক্ষ। উচ্ছেদ ঠেকাতে চারজন আইনজীবীকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন ও নানান দেন দরবার চালায় দোকান মালিকরা। তারা দাবি করেন, হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ থাকার পরেও করপোরেশন তাদের দোকান ভেঙে দিচ্ছে। নিজেদের অবস্থানে অটল থেকে প্রথম দিনের অভিযানে মার্কেটের বেশ কিছু অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেয় নগর কর্তৃপক্ষ।
গতকাল উচ্ছেদের ওপর হাইকোর্টের তিন মাসের স্থিতাবস্থা আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। বুধবার সিটি করপোরেশনের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এই আদেশ দেন।
এর আগে এক রিট আবেদনের শুনানিতে গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চ দোকান উচ্ছেদের ওপর স্থিতাবস্থা দেন।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল। আর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও মেজবাহুর রহমান শুভ।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী মেজবাহুর রহমান শুভ বলেন, ‘গুলিস্তানের সুন্দরবন স্কয়ার মার্কেটের দোকান উচ্ছেদের ওপর হাইকোর্টের তিন মাসের জন্য স্থিতাবস্থা আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন। এর ফলে ওই মার্কেটে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে আর কোনো বাধা রইল না।’
এদিকে মার্কেটের মূল নকশার বাইরে দোকান তৈরি করে তা সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছে হাতবদল করেছে মার্কেট কর্তৃপক্ষ। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীদের ভাষ্যমতে, ৭৫৩টি দোকান হাতবদলে মার্কেট কর্তৃপক্ষ লোপাট করেছে কোটি কোটি টাকা।