জাতীয়ভাবে সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো আপাতত খুলছে না বলে আভাস দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি বলেছেন, স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায় এমন বিষয়গুলোর সিদ্ধান্ত নিতে জাতীয় সিদ্ধান্তের প্রয়োজন হয়। পরীক্ষার পূর্বে হল খোলার দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনসহ বিভিন্ন দাবির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভিন্ন কিছু ভাবছে কিনা জানতে চাইলে বৃহস্পতিবার বিকালে উপাচার্য এ কথা বলেন।
উপাচার্য বলেন, প্যানডেমিকের সময় বিচ্ছিন্ন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া কঠিন। এ পরিস্থিতিতে সবকিছুই সমন্বিত জাতীয় সিদ্ধান্ত থাকতে হয়। তবে শিক্ষার্থীদের দাবিগুলোরও ‘যৌক্তিকতা’ রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন উপাচার্য।
গত ১০ ডিসেম্বর আবাসিক হল বন্ধ রেখেই আগামী ২৬ ডিসেম্বর থেকে অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্সের আটকে থাকা পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের অনেকে আপত্তি জানিয়েছেন। বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা বলছেন, আবাসিক হল বন্ধ রেখে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্তটি যৌক্তিক নয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন আবাসিক হল খুলেই এসব পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।
এরই অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পরীক্ষার্থীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হল খুলে দেওয়াসহ চার দফা দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের ব্যানারে রাজু ভাষ্কর্যে অবস্থান নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের বেশ কিছু শিক্ষার্থী। আজ বৃহস্পতিবারও তাদের এ অবস্থান চলছে। অবস্থানে থাকা শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সুস্পষ্ট বক্তব্য না পাওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই কর্মসূচি চলবে। এদিকে আজ দুপুরে স্বাস্থ্য-সুরক্ষা নিশ্চিত করে পরীক্ষার পূর্বে হল খুলে দেয়ার দাবিতে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষিত না হলে প্রয়োজনে আন্দোলনে যাবে ছাত্রলীগ উল্লেখ করে ঢাবি ছাত্রলীগ সভাপতি সন্জিত চন্দ্র দাশ বলেন, স্যারকে আমরা জানিয়েছি পরীক্ষা নিতে হলে অবশ্যই হলো খুলেই পরীক্ষা নিতে হবে। অথবা ভিন্ন কোনো পন্থায় এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হোক যেগুলো শিক্ষার্থীদের পক্ষে যাই। তবে সিদ্ধান্তে যদি শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষিত না হয় তাহলে আমরা প্রয়োজনে আন্দোলনে যাব ।
ঢাবি ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আমরা স্যারকে আহবান জানিয়েছি স্বাস্থ্য-সুরক্ষা নিশ্চিত করে পরীক্ষার পূর্বে যেন হলগুলো খুলে দেয়া হয়৷ আমরা প্রত্যাশা করছি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেবে এবং ইতোমধ্যে প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটি পুনরায় বিবেচনা করবে।