দেশ স্বাধীন কোনো ভাষণে হয়নি। দেশ স্বাধীন হয়েছে যুদ্ধে। সেই যুদ্ধের ডাক দিলেন কে? তিনি জিয়াউর রহমান। যুদ্ধ করেছেন কে? জিয়াউর রহমান। সুতরাং দেশ যতদিন থাকবে, জিয়াউর রহমান ততদিন থাকবে বলেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
শুক্রবার (৫ মার্চ) দুপুর ১২টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রাম পরিষদ আয়োজিত ‘গণতন্ত্র, গণমাধ্যম, গণকণ্ঠ অবরুদ্ধ, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কোন পথে? শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আওয়ামী লীগ আওয়ামী লীগের জন্য, মানুষের জন্য না। এদের মানুষের সংজ্ঞায় ফেলানো যায় না। এ আওয়ামী লীগ ভালো করবে, সেটা আশা করা যায় না। তাদের দেশের জন্য ত্যাগ আছে, আমাদের নেই। আমাদের ত্যাগ মলমূত্রের মতো।
তিনি বলেন, ১৯৬২ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত আমি কোনো সংগঠনের সদস্য ছিলাম বলে মনে পড়ে না। যখন দলের কর্মী বেড়ে যায়, তখন যারা পদ বঞ্চিত হয়, বুঝতে হবে তাদের মাঠে কোনো ত্যাগ নেই। তাদের দিয়ে আন্দোলন হয় না। তিনি আরো বলেন, আওয়ামী লীগ মানুষের কাতারে পড়ে না। নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, শেয়ারবাজার-ব্যাংক লুট, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, এটা আওয়ামী লীগের দীর্ঘ দিনের ঐতিহ্য। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে আমরা স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছি। সেখানে সেই কুকর্ম উঠে আসবে।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, আওয়ামী লীগ অকৃতজ্ঞের দল। আজ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতাদের নাম মুখে নেওয়া হয় না। আজ ইতিহাস এমন ভাবে বিকৃত করা হয়েছে, সবকিছু একজনই করেছেন। আওয়ামী যে কর্মকাণ্ড করছে, তাদের কাছ থেকে এর চেয়ে বেশি কী আশা করবেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধে প্রথম পাকিস্তানি বাহিনীর বিরুদ্ধে গুলি ছুড়েন জিয়াউর রহমান। আজ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে জিয়াউর রহমানের বীর উত্তম খেতাব কেড়ে নেওয়ার অপচেষ্টা করছে। আওয়ামী লীগের সেই সুবর্ণজয়ন্তী প্রোগ্রাম লাঠি নিয়ে রুখে দিতে হবে। ২০২১ সাল হবে আওয়ামী লীগের পতনের বছর।
সভায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, ভাষা আন্দোলনে আওয়ামী লীগের কোনো ভূমিকা নেই। ভাষা সৈনিক মতিন, অধ্যাপক গোলাম আযম, তজমুদ্দীন মজলিস এরাই ভাষা আন্দোলনের সুতিকাগার। এখন আওয়ামী লীগ বলে ভাষা আন্দোলনেও নাকি শেখ মুজিবের ভূমিকা ছিল। এটা হাস্যকর।
তিনি বলেন, এখন নির্বাচন নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। জানিপপের নাম শুনছেন, সেই কলিমুল্লাহ, একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, এখন তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে চোর বলেন, আর শিক্ষামন্ত্রী বলেন, কলিমুল্লাহ চোর। সেই চোর জানিপপ নির্বাচনের সার্টিফিকেট দেয়। এখন নির্বাচন হাসিঠাট্টার। এ সরকার বৈধ-অবৈধ কিছু নেই, এটা একটা রাজত্ব। এ হায়নার রাজত্ব ভাঙতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বিপ্লব করতে হবে। যেটা বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা করেছেন। বিএনপির দিকে তাকিয়ে থাকলে হবে না। যে যার অবস্থান থেকে বিপ্লব করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনার কৃতজ্ঞতা থাকা উচিত। উনার বাবা বাকশাল করে এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। জিয়াউর রহমান এসে আওয়ামী লীগকে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছেন। যদি না দিতেন, তাহলে আজ আওয়ামী লীগের অস্তিত্ব থাকতো না।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি সাহেদুল ইসলাম লরেনের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওলামা দলের কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা রফিকুল ইসলাম, জাসাসের কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুর রহমান মোল্লা প্রমুখ।