গণপরিবহন শ্রমিকদের জীবনযাপন, তাদের কর্মস্থলের নানান সমস্যা, সমাধান ও সম্ভাবনা নিয়ে নির্মিত ডকুমেন্টারি ফিল্ম ‘ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ডায়েরি’ প্রদর্শিত হলো রাজধানীর সেগুনবাগিচার স্বাধীনতা হলে।
কোনো দেশের অর্থনীতির গতি প্রবাহ, সড়কপথে নিরাপদ ভ্রমণ, পণ্য পরিবহন ও পরিবহন শ্রমিকের মর্যাদাপূর্ণ জীবন এক সূত্রে গাথা। নিরুপায় যাত্রী, অশিক্ষিত/স্বল্প শিক্ষিত শ্রমিক, শক্তিশালী মালিক এবং চাঁদাবাজি নিয়ে পরিবহন খাত সবসময় আলোচনার কেন্দ্রে থাকে। কিন্তু দুর্ঘটনার শাস্তি নিয়ে যতটা সরব, দুর্ঘটনার কারণ দূর করার প্রচেষ্টা ততটা দৃশ্যমান হয়ে ওঠে না। সেবাদানকারী এই বিশাল সংখ্যক শ্রমিকের বাস্তব সমস্যা ও সম্ভবনার নানা দিক সমাজের অন্যান্য অংশের নজরের বাইরে রয়ে গেছে।
সেইসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজহারুল ইসলাম অভির পরিচালনায় এবং মো. সেলিমের প্রযোজনায় সড়ক পরিবহন শ্রমিকদের জীবন ও কর্ম নিয়ে নির্মিত হয়েছে তথ্যবহুল ডকুফিল্ম ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স ডায়েরি। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের উদ্যোগে সেগুনবাগিচাস্থ স্বাধীনতা হলে ডকুফিল্মটির প্রিমিয়ার অনুষ্ঠিত হয়।
প্রিমিয়ার উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ফেডারেশনের সভাপতি, সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাস-ট্রাক ওনার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ, রোড সেইফটি ফাউন্ডেশনের পরিচালক সাইদুর রহমান ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
ডকুফিল্মটির প্রসঙ্গে পরিচালক আজহারুল ইসলাম অভি বলেন, “পরিবহন শ্রমিকরা এদেশেরই নাগরিক। আমরা তাদের দোষ ত্রুটি নিয়ে যতটা সরব থাকি তাদের অধিকার নিয়ে ততটা সরব কেউ থাকিনা। তাদের দুর্দশার কথাও কেউ তেমন একটা ভাবিনা। তাদেরকে রাস্তায় যথাযথ নিয়ম মানার কোনও প্রশিক্ষন বা কর্মশালাও দেখিনা। ফলে সমাজের সাথে তাদের একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে। তাই সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এই ডকুফিল্মটি নির্মাণ করা।”
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান খান এমপি বলেন, “বাংলাদেশের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য জায়গা হলো সড়ক পরিবহন। এই সড়ক পরিবহনের সঙ্গে যুক্ত ৫০ লাখ শ্রমিকের বাস্তবমুখী সমস্যা আমাদের চিহ্নিত করা দরকার। সড়ক দুর্ঘটনার জন্য শুধু চালক এককভাবে দায়ী নয়। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, মালিক পক্ষের ক্রটি, পথচারীর ত্রুটি, যাত্রীদের কারণ, বিআরটিএ’র দুর্নীতি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী। চালকরা ঘাতক নয়, তারা সেবক।”