1. admin@starmail24.com : admin :
  2. editor@starmail24.com : editor@starmail24.com :
প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনায় সমমনা ১৩ দলের মানববন্ধন - starmail24
শিরোনাম :
শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতির পিতা মনে করে না অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী সুবিধাভোগী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে : রিজভী বেগম মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশি বাবা-ছেলের প্রাণ গেল দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে ১২ বিচারপতিকে চায়ের আমন্ত্রণ, হাইকোর্টের সামনে শিক্ষার্থীরা ৭ মার্চ ও ১৫ আগস্টসহ জাতীয় আটটি দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির‌ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জার্মানিতে প্রবাসী সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শারদীয় দূর্গা উৎসব মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিকে হত্যার ঘটনায় ৩ বাংলাদেশি ৭ দিনের রিমান্ডে আশুলিয়ায় পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ, সড়কে ২০ কিলোমিটার যানজট সৃষ্টি




প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনায় সমমনা ১৩ দলের মানববন্ধন

স্টার মেইল, ঢাকা
  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২১

গত ৫০ বছর ধরে জামাত-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে নিরলস কাজ করার প্রেক্ষিতে রাজারবাগ শরীফকে যথাযথ মূল্যায়নের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি কামনা করে বাংলাদেশ উলামা পীর মাশায়েখ মহাজোটসহ সমমনা ১৩টি সংগঠনের নেতাকর্মীরা মানববন্ধন করেছে।

শনিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর হাইকোর্টের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন গোপালগঞ্জ দরবারের পীর ছাহেব আল্লামা শোয়াইব আহমদ। সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, মুহম্মদ মহিউদ্দিন সালেহী-পীর সাহেব, মোজাদ্দেদিয়া দরবার শরীফ, শনির আখড়া, মুহম্মদ আবদুস সালাম-পীর সাহেব, নক্সবন্দী মোজাদ্দেদিয়া দরবার, কদমতলা, ফকির মোসলেহউদ্দিন প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, রাজারবাগ দরবার শরীফের সাথে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীদের আকাশ পাতাল পার্থক্য। কারণ- জঙ্গিদের কাজের পদ্ধতি ও চিন্তা-ভাবনার সাথে রাজারবাগ শরীফের কাজের পদ্ধতি ও চিন্তাভাবনায় রয়েছে বিস্তর ফারাক। জঙ্গিদের কাজের ধরন হলো- তারা মানুষকে হতাহত করে, ভীত সন্ত্রস্ত করে, অস্ত্র হাতে নিয়ে, হুমকি ধামকি দিয়ে, বোমাবাজি করে, ত্রাস সৃষ্টি করে, অর্থাৎ আইন অমান্য করে তাদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের চেষ্টা চালায়। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফের কাজের পদ্ধতি হলো, রাজারবাগ শরীফ রাষ্ট্রের আইন মেনে, জনমত তৈরী করে, সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিশুদ্ধকরণের মধ্য দিয়ে ইসলামী আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে চায়। জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের সাথে রাজারবাগ দরবার শরীফের এখানেই মৌলিক পার্থক্য।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাজারবাগ দরবার শরীফের পক্ষ থেকে যদি এ দেশে কোন ইসলামী আইনের প্রয়োজন অনুভব করা হয়, তখন প্রয়োজনের কথা রাজারবাগ শরীফের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, অধিদফতর বা কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়। তারপরও যদি কাজ না হয়, তখন মিডিয়ার মাধ্যমে জনমত তৈরি, পত্রপত্রিকায় লেখালেখি, প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করা হয় যেন সরকার বুঝতে সক্ষম হয়, জনগণের আইনটি প্রয়োজন। এতে উদ্বুদ্ধ হয়ে সরকার যখন আইন তৈরির কাজ শুরু করে, তখন সেই খসড়া আইন নিয়ে কোন কথা থাকলে রাজারবাগ শরীফ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি পাঠায়, আইন বিয়োজন-সংযোজনের জন্য পরামর্শ দেয়। এরপরও আইনটি নিয়ে যদি রাজারবাগ দরবার শরীফের কোন কথা থাকে, তবে আদালতের দারস্থ হয়ে আইনের ব্যাপারে আপত্তি সরকারকে জানানো হয়। অর্থাৎ রাজারবাগ শরীফ সংবিধান অনুযায়ী আইনটির পরিবর্তন বা পরিশোধন চায়। পাশাপাশি কেউ ধর্মবিরোধী কোন অপরাধ করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী রাজারবাগ শরীফ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে।

তারা বলেন, আখেরি নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে কটূক্তির বিরুদ্ধে মৃত্যুদ- বিধান রেখে আইন পাশ করার জন্য রাজারবাগ শরীফ আইন মন্ত্রনালয়ের কাছে চিঠি দেয়। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় বিষয়টি নিয়ে ব্যবস্থা না নেয়ায় রাজারবাগ শরীফ পত্রিকায় লেখনীর মাধ্যমে জনমত তৈরি করে, যেন জনগণ সরকারের প্রতি এ আইন প্রণয়নের ব্যাপারে দাবি তুলতে পারে। পাশাপাশি, অনলাইনে আখেরী নবী হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুবারক শানে কটূক্তি অব্যাহত থাকায় রাজারবাগ শরীফ কটূক্তি বন্ধে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করে। এতে বিটিআরসি সচেতন হয়ে অনেক ধর্মবিদ্বেষী ওয়েবসাইট বন্ধ করে দেয়। রিট নম্বর- ৯৬৬০/২০১৫।

বক্তারা বলেন, ২০১৩ সালে নাস্তিক ব্লগারদের বিরুদ্ধে উগ্রবাদী গোষ্ঠীগুলো শাপলা চত্বরে ভাংচুর ও সহিংস কার্যক্রম চালালেও রাজারবাগ দরবার শরীফ তা থেকে বিরত থাকে। এর বদলে যে সকল নাস্তিক এসব অপকর্মের সাথে যুক্ত, তাদের দলিলভিত্তিক তালিকা তৈরী করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে জমা দেয়। সেই তালিকা নিয়েই পরবর্তীতে দেশের গুরুত্বপূর্ণ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো মিটিং করে এবং সেই সূত্র ধরে ধর্মবিদ্বেষী নাস্তিকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১৫ সালের পর কিছু ধর্মবিদ্বেষীদের উপর হামলা ও হত্যাযজ্ঞ চালায় উগ্রবাদী ও জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো। বিশেষ করে, বইমেলার লেখক অভিজিৎ রায়কে হত্যা কিংবা জাফর ইকবালের উপর হামলার ঘটনা উল্লেখযোগ্য। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফ এ ধরনের হামলা-হত্যা না করে, রাষ্ট্রীয় আইন ব্যবহার করে ধর্মবিদ্বেষীদের বিরুদ্ধে রিট-মামলা দায়ের করে। যেমন- বইমেলায় নাস্তিক লেখক দ্বিয়ার্ষি আরাগ দিপুর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মেনশন করে রুল নেয়া এবং নিম্ন আদালতে মামলা করা। নাস্তিক লেখক তসলিমা নাসরিন, সুপ্রীতি ধর, সুচিষ্মিতা সিমন্তি ও অপু ম-লের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইবুনালে মামলা করা ইত্যাদি।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, উগ্রবাদী গ্রুপগুলো বিভিন্ন সময় মূর্তি-ভাস্কর্য ভাংচুর করে থাকে। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফ এ ধর্মবিরোধী ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলার জন্য ভাংচুরে না গিয়ে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করে। যেমন- ২০১৭ সালে হাইকোর্টে থেমিসের মূর্তির বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইসলামী দলগুলো সহিংস আন্দোলন করলেও রাজারবাগ দরবার শরীফ এসবে সমর্থন দেয় নি। বরং উচ্চ আদালতথেকে থেমিসের মূর্তি সরাতে রাজারবাগ দরবার শরীফের পক্ষ থেকে রিট দায়ের করা হয়েছিলো।পৃথিবীর অনেক দেশে মসজিদ ভাঙ্গার ঘটনা থেকে সহিংস ঘটনার জন্ম হয়। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফ সহিংস ঘটনা দিয়ে নয়, বরং মসজিদ ভাঙ্গা রুখতে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করে। রিট নং- ৭২১২/২০১৮ ।

তারা বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধান তুলে দেয়ার জন্য একদল রিট দায়ের করলে তার বিরুদ্ধে কথিত ইসলামী দলগুলো হরতাল, মিটিং মিছিল ও সহিংস ঘটনার হুমকি দেয়া শুরু করে। কিন্তু রাজারবাগ দরবার শরীফ সে পথে না গিয়ে ইন্টারভেনার হিসেবে সেই রিটে পার্টি হয়ে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম দ্বীন ইসলাম বহাল রাখা ও তাদের রিট আবেদনের বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে। রিট নং- ১৪৩৪/১৯৮৮।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, পত্র-পত্রিকায় জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রাজারবাগ দরবার শরীফের পক্ষ থেকে অনেক ক্ষুরধার বিবৃতি-বক্তব্য পত্রস্থ হয়েছে।

বক্তারা বলেন, রাজারবাগ দরবার শরীফ হচ্ছে ত্বরিকতপন্থী ইলমে তাসাউফ বা অন্তর পরিশুদ্ধকরণের দরবার শরীফ। মূলত দ্বীন ইসলামের প্রচার প্রসার হয়েছে পীর সাহেব বা সূফী সাধকদের অন্তর পরিশুদ্ধকরণ কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে। কারণ একটি মানুষের অন্তর যখন পরিশুদ্ধ হয়ে যায়, তখন সে স্বাভাবিকভাবে মন্দ কাজ হতে ফিরে আসে এবং ভালো কাজ গ্রহণ করে। তাই সুফী-পীর সাহেবগণ যখন দ্বীন ইসলামের প্রচার করেছেন, তখন তাদের বোমাবাজি আর সন্ত্রাসের দরকার হয়নি। কিন্তু যে সব তথাকথিত ইসলামপন্থীরা তরিক্বত বা ইলমে তাসাউফ বিশ্বাস করে না, তাদের কাছে অপরকে শুদ্ধ করার জন্য জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদ তথা শক্তি প্রয়োগ ভিন্ন অন্য কোন পদ্ধতি অবশিষ্ট থাকে না। কারণ অপরের অন্তর পরিশুদ্ধের জ্ঞান তাদের কাছেই নেই। এ কারণে ঐ সমস্ত দলগুলো ইসলাম প্রচার করতে গিয়ে অস্ত্র ও গায়ের শক্তি ব্যবহার করে। তখনই তৈরী হয় জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসবাদ।




আরো পড়ুন