মালয়েশিয়ায় মানব পাচার চক্রের বিরুদ্ধে চলছে অভিযান। উন্নত জীবনের মিথ্যা প্রলোভন আর আকাশছোঁয়া স্বপ্ন দেখিয়ে অসহায় মানুষদের সর্বশান্ত করা এই ধরনের মানুষদের আইনের আওতায় আনতে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী দীর্ঘদিন থেকে মাঠে কাজ করছে।
২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানী বনানী নিজ অফিস মাস-বাংলা ওভারসীজ থেকে মােঃ জামিল হােসাইনকে (৫১) মানব পাচার ও বিদেশে পাঠানাের নাম করে অর্থ আত্মসাৎ এর কারনে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব)। র্যাব জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ মােঃ জামিল হােসাইন ও তার ম্যানেজার পন্টু সাংমা পল এবং দেশী-বিদেশী দালালদের সহযােগীতায় বিভিন্ন দেশের ভুয়া ডিমান্ড লেটার ও ভূয়া বিজ্ঞাপন তৈরী করে তা লােকজন দেরকে দেখিয়ে পােল্যান্ড, জাপান, মাল্টা, রােমানিয়া মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশে পাঠানাের নাম করে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে।
বনানী থানায় দায়েরকৃত মামলার কপি
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, অনেক লােককে ভারতে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে তার পরিবারের লােকদেরকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে অর্থ আদায় করে থাকে। প্রতারনার শুরুতে সে ভিকটিমদেরকে ভুয়া ডিমান্ড লেটার দেখিয়ে তাদের নিকট হতে পাসপাের্ট ও নগদ টাকা নিয়ে নেয়। তারপর তাদেরকে ভিসা দেওয়ার নাম করে আজ না কাল বলে ঘােরাতে থাকে। এক সময় তাদেরকে বিদেশে না পাঠিয়ে এবং টাকা না দিয়ে সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করে আসছে মর্মে স্বীকার করে। টাকা নেওয়ার কথা র্যাব সদস্যদের নিকট স্বীকার করে এবং টাকার কোন রশিদ সে দেয় না মর্মে জানায়।
সে মাস-বাংলা ওভারসীজ এর নাম ব্যবহার করে অসাধুভাবে বিভিন্ন দেশে লােক পাঠানাের নাম করে সুকৌশলে সাধারন ও নিরীহ বিভিন্ন লােকের নিকট হতে অর্থ আত্মসাৎ করে প্রতারনা করে আসার কথা স্বীকার করে।
বনানী থানায় ভুক্তভুগিদের এজাহারের কপি
বনানী থানায় ভুক্তভুগিদের এজাহারের কপি
এছাড়াও জাহিদ হাসান (২৪), পিতা- জাহাঙ্গীর আলম, মাতা- জোহরা আক্তার, সাং- খােয়ামুড়ি, ডাকঘর- পারিল নওদা, থানা- সিংগাইর, জেলা- মানিকগঞ্জকে পােল্যান্ড পাঠানাের আশ্বাস দিয়ে ভুয়া ডিমান্ড লেটার ও ভূয়া নিয়ােগ বিজ্ঞাপন দেখিয়ে নগদ ও ব্যাংকের মাধ্যমে ৫,৭০,০০০/- (পাঁচ লক্ষ সত্তর হাজার) টাকা এবং ফরিদ আহম্মেদ (৩৪), পিতা- মফিজুর রহমান, মাতা- ফরিদা ইয়াছমিন, সাং- উত্তর হানুবাইশ, থানা- রামগঞ্জ, জেলালক্ষীপুর এর নিকট হতে ৩,০০,০০০/- টাকা, হাছিব হাওলাদার (৩৪), পিতা- সামছুদ্দিন আহম্মেদ, মাতাজাহানারা বেগম, সাং- পশ্চিমডাঙ্গা, থানা- বাগেরহাট সদর, জেলা- বাগেরহাট এর নিকট হতে ৩,০০,০০০/টাকা, মােঃ কামরুল হাসান (৪২), (পাসপাের্ট নং- বিএল ০৮৩৮৭৪৬), পিতা- মােঃ বাদশা মিয়া, সাং- ক১৪/এ, নর্দা, গুলশান, ঢাকা এর নিকট হতে ৫,৩০,০০০/- টাকা, মােঃ ইউসুফ আলী (২৩) পিতা- সুরুজ মিয়া, মাতা- পিয়ারা বেগম, সাং- বাড়ীয়াছনি, থানা- রুপগঞ্জ, জেলা- নারায়নগঞ্জ এর নিকট হতে ৪,০০,০০০/টাকা আত্মসাৎ করার কথাও স্বীকার করে। মােঃ জামিল হােসাইন অনেকের কাছ থেকে পাসপাের্ট নিজ হেফাজতে রেখেছে। ভুক্তভুগিদের বার বার অনুরােধ করা সত্ত্বেও ফেরত দেয়নি।
উল্লেখ্য যে, উপরােক্ত মােঃ জামিল হােসাইনকে মানব পাচার ও প্রতিরোধ দমন আইন ২০১২/৭ /৮/১০ ধারায় জেলে প্ররণ করা হয়।
আরও পড়ুন : মালয়েশিয়া আ.লীগের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক পদ থেকে কামরুজ্জামান কামালের পদত্যাগ