কানাডা, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও বাড়ির মালিক বাংলাদেশিদের তালিকা চেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। উচ্চ আদালত নির্দেশনা দেওয়ার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সচিবের কাছে ওই চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার দুদক সচিব মু আনোয়ার হোসেন হাওলাদার জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘এটা কমিশনের একটি নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। কমিশন ইতোমধ্যে যারা কানাডা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে অবৈধ সম্পদের মাধ্যমে বাড়িঘর করেছেন, তাদের ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে।
তারা যেন এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে জেনে, তাদের এজেন্সি অর্থাৎ আমাদের দূতাবাসগুলোর মাধ্যমে জেনে আমাদের জানায়, এজন্য চিঠি দেওয়া হয়েছ
গত বছরের ১৮ নভেম্বর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে একটি অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বাংলাদেশ থেকে কানাডায় টাকা পাচারের ক্ষেত্রে সরকারি কর্মচারীর সংখ্যাই বেশি বলে মন্তব্য করেন। এরপর বিদেশে টাকা পাচার করে সেকেন্ড হোম তৈরি করার বিষয়টি নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়।
এর পরিপ্রেক্ষিতেই ২২ নভেম্বর বিদেশে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িতদের যাবতীয় তথ্য চেয়ে একটি স্বতঃপ্রণোদিত রুল জারি করে হাইকোর্ট। পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে গণমাধ্যমের বিভিন্ন প্রতিবেদন বিবেচনায় নিয়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল বেঞ্চ চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দেয়।
গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দুদক, সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট, এনবিআরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনগুলো বিদেশে অর্থপাচার নিয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয়।
দুদক তাদের প্রতিবেদনে জানায়, ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত অর্থপাচারের অপরাধে ৪৭টি মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে। আর এ সংক্রান্ত ৮৮টি মামলা তদন্ত করছে দুদক। পুরনো এই অর্থপাচারকারীদের তালিকা দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। তারা ২২ নভেম্বরের পরে নতুন করে কারও বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে কিনা তা জানাতে বলেন।
হাইকোর্টের ওই নির্দেশনা মতেই বিদেশে সেকেন্ড হোম তৈরি করা ব্যক্তিদের বিষয়ে তথ্য জানতে উদ্যোগী হয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা বা তথ্য পেলে তাদের বিষয়ে খোঁজ-খবর ও অনুসন্ধান করে নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হবে।