মালেয়শিয়ায় গত নভেম্বর থেকে অনিয়মিত অভিবাসীদের বৈধকরণ প্রক্রিয়া রিক্যালিব্রেশন নামে বৈধকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় বৈধ হতে নতুন পাসপোর্টের আবেদন বৃদ্ধি পেয়েছে আগের চেয়ে কয়েক গুন বেশি। দেশেটিতে থাকা বিভিন্ন দেশের অনিয়মিত অভিবাসীরা আশার আলো দেখলেও সংশয়ে রয়েছেন বাংলাদেশী অনিয়মিত অভিবাসীগণ। যথাসময়ে পাসপোর্ট হাতে পাওয়া নিয়ে রয়েছে সংশয়। এদিকে করোনা মহামারির কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে মালয়েশিয়ায় টানা লকডাউন চলছে। সরকার বাধ্যতামূলক আরোপ করেছে স্বাস্থ্যবিধি, সামাজিক দূরত্বসহ বিভিন্ন বিধিনিষেধ। দেশটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনও মালয়েশিয়ার সরকারের বিধিষেধ পালনে সরাসরি পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণ করছেন না। পাসপোর্ট আবেদন ডাকযোগে পাঠানোর নিদের্শনা জারী করছেন হাইকমিশন। এদিকে ডাকযোগে আবেদন পৌঁছাতে সময় লাগছে প্রায় ২ সপ্তাহ।
এছাড়াও পাসপোর্ট অনলাইন হওয়া বাংলাদেশ থেকে সেদেশে পৌঁছানো ও গ্রাহকের হাতে পাওয়া পর্যন্ত সময় লাগছে প্রায় ২ মাস। এতো লম্বা সময় পর পাসপোর্ট হাতে পাওয়ার পর বৈধতার সুযোগ নেয়া নিয়ে রয়েছে সংশয়। ধারণা করা হচ্ছে এবারও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ভিসা প্রার্থী বৈধতার সুযোগ হারাবেন শুধু যথাসময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ায়।
এ অবস্থায় প্রবাসীদের মধ্যে দ্রুত পাসপোর্ট বিতরণের জন্য মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এম রেজাউল করিম রেজার নেতৃত্বে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের সঙ্গে দেখা করে অনুরোধ জানানো হয়েছে। অনুরোধের প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বাসও দিয়েছেন।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করলে হাইকমিশনের শ্রম শাখার প্রথম সচিব হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডল এ প্রতিবেদককে জানান প্রবাসী বাংলাদেশিরা যেন কর্মক্ষেত্রে সঠিক সময়ে ভিসা রিনিউ করতে পারেন সে লক্ষ্যে সব নীতিমালা অনুসরণ করে ছুটির দিনসহ দূতাবাস কর্মীরা অবিরাম দিন-রাত কাজ করে করোনার মধ্যেও প্রায় এক লাখ পাসপোর্ট বিতরণ করেছেন।
তিনি আরও জানান, সিএমসিও এবং এসওপি নির্দেশনা মেনে প্রতিদিন ১৩শ’ পাসপোর্ট বিতরণ করা হচ্ছে এবং প্রতিদিন প্রায় ১৫শ’ নতুন পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে। এছাড়া পাসপোর্ট সংক্রান্ত বিভিন্ন সমস্যার সমাধান ও অন্যান্য সেবা নিয়মিত দেয়া হচ্ছে।
এছাড়া তিনি আরও বলেন, শনিবার ও রোববার মালয়েশিয়ায় সরকারি ছুটি। এই দুই দিন দূতাবাসের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও প্রবাসীদের দ্রুত পাসপোর্ট সেবা নিশ্চিত করতে পাসপোর্ট সার্ভিস শাখার কর্মীরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।
এছাড়াও মালয়েশিয়ার বিভিন্ন প্রদেশে অবস্থিত অগ্রণী রেমিটেন্স হাউজের মাধ্যমে গ্রাহকের হাতে সহজ ও দ্রুত পাসপোর্ট পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন কর্তৃপক্ষ। জোহর বারু থেকে আসা পাসপোর্ট প্রত্যাশি সাজ্জাদ, রুবেল ফারুক ও রিজাউল জানান অতিতের চেয়ে বর্তমান হাইকমিশন কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত শ্রমিকবান্ধব এবং প্রকৃতসেবা দাতা। দিন দিন হাইকমিশন হয়ে ওঠছে নির্ভরতার আশ্রয়স্থল যেন একটুকরো বাংলাদেশ।