ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে (ডিআইপি) অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এজিডি) পদে প্রেষণে পদায়ন নিয়ে তৈরি হয়েছে চাপা ক্ষোভ। এই পদায়নের ফলে যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মকর্তাদের মধ্যে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এডিজি পদে নিজস্ব যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতাসম্পন্নদের পদায়ন করা হলে জনগণ আরও বেশি সেবা পাবেন।
জানা যায়, গত ১৪ জুলাই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রশাসন ক্যাডারের একজন যুগ্ম সচিবকে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদে প্রেষণে পদায়নের আদেশ জারি করে। কিন্তু অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদে প্রেষণে অন্য কোনো দপ্তর বা ক্যাডার থেকে কর্মকর্তা নিয়োগ করা হলে অধিদপ্তরের আটটি ধাপের কর্মকর্তা, কর্মচারীগণ পদোন্নতির সুযোগ হতে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। এতে সবার মধ্যে হতাশার সৃষ্টি এবং কর্মস্পৃহা হারিয়ে ফেলার আশঙ্কাও অমূলক নয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, আরপি ও এমআরভি এবং ই-পাসপোর্ট ও ই-ভিসা সংক্রান্ত কার্যক্রম অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর। এই কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকলে কার্যক্রম পরিচালনায় দীর্ঘসূত্রিতা ও জটিলতা সৃষ্টি হবে। এই জটিলতায় জনসেবা ও জনস্বার্থ বিঘ্নিত হবে।
অন্যদিকে, বৈদেশিক মিশনে পাসপোর্ট-ভিসা উইংয়ে নিজস্ব কর্মকর্তাদের পদায়ন চায় ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। প্রায় ৮ বছর আগে, সরকার দেশের বাইরে বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশনে প্রবাসীদের উন্নত সেবা দেওয়ার জন্য পাসপোর্ট ও ভিসা উইং স্থাপন করে। ১৯টি মিশনের জন্য তখন ৭৩টি পদ তৈরি করা হয়েছিল। অর্থাৎ, প্রতি উইংয়ের জন্য ৩ থেকে ৫টি পদ। এই পদগুলো বহির্গমন এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) কর্মকর্তাদের দিয়ে পূরণ করার কথা ছিলো। ২০১৫ সাল থেকে চালু হওয়ার পর একজন ডিআইপি কর্মকর্তাও প্রথম সচিব হিসেবে নিয়োগ পাননি, যেটি এই উইংয়ের শীর্ষ পদ। জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিবরাই মূলত এই পদে নিয়োগ পেয়েছেন। অথচ উইং এর দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার আগে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা ডিআইপির কর্মকর্তাদের কাছ থেকেই প্রশিক্ষণ নেন।
ডিআইপির কর্মকর্তারা জানান, বৈদেশিক মিশনের পাসপোর্ট-ভিসা উইংয়ে বহির্গমন এবং পাসপোর্ট অধিদপ্তরের (ডিআইপি) কর্মকর্তাদের পদায়নের বিষয়টি মূল প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন দিয়েছেন। কিন্তু এই অবস্থানগত পরিবর্তনের কারণে শুধুমাত্র ডিআইপির দক্ষ কর্মীরাই বঞ্চিত হচ্ছেন না, এতে বিভিন্ন দেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিক এবং সারা বিশ্ব থেকে আসা পর্যটকরা উন্নত সেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।
ডিআইপির কয়েকজন হতাশা প্রকাশ করে বলেন, পাসপোর্ট সেবা দেওয়া একটি কারিগরি বিষয় এবং সঠিক মানুষকে সঠিক পদে বসানো হলে মিশনে আরও উন্নত সেবা দেওয়া যাবে।
জানতে চাইলে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ূব চৌধূরী বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করা হলেও এখনো কেউ যোগদান করেনি। তবে অধিদপ্তর থেকে কেউ এডিজি হতে পারবেন না এমন কোন নির্দেশনা আমরা পায়নি। যদি হয়ে থাকে আমরা জানিনা, তবে এটি উচিত হবে না।
বৈদেশিক মিশনে পাসপোর্ট-ভিসা উইংয়ে নতুন কোন প্রজ্ঞাপন হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অধীনে যে পদগুলো ছিলো পুরাতন লোকজন বদলিয়ে নতুন লোকজনকে পাঠানো হচ্ছে।