1. admin@starmail24.com : admin :
  2. editor@starmail24.com : editor@starmail24.com :
রাজারবাগ পী‌রের প‌ক্ষে প্রধানমন্ত্রীর হস্ত‌ক্ষেপ কামনা - starmail24




রাজারবাগ পী‌রের প‌ক্ষে প্রধানমন্ত্রীর হস্ত‌ক্ষেপ কামনা

স্টার মেইল, ঢাকা
  • সর্বশেষ আপডেট : শনিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২১

রাজারবাগ শরীফের বিরুদ্ধে জামায়াত-শিবির প্রভাবিত কুচক্রী মহ‌লের অপপ্রচার এবং মিডিয়া ক্যুর প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী উলামা পরিষদসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বি‌ভিন্ন সমমনা দল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধন করেছে।

মানবন্ধনে বক্তারা বলেন, বর্তমানে রাজারবাগ দরবার শরীফের বিরুদ্ধে যে মিডিয়া ক্যু চলছে তাতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের ধর্মপ্রাণ জনগোষ্ঠী মর্মাহত। কারণ রাজারবাগ দরবার শরীফের পীর সাহেব ১৯৭১ সালে ছাত্র অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। খাদ্য সহায়তা ও আর্থিক সহায়তা করেছেন। উনার আপন ভাই ও ঘনিষ্ট আত্মীয়-স্বজনরাও মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। পীর সাহেবের মেজ ভাই হাফিজুর রহমান হারুণ সেক্টর-২ এর অধীনে ক্র্যাক প্ল্যাটুনের একজন গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, তিনি যেন জামাত-জঙ্গীবাদবিরোধী হক্ব দরবার শরীফ, রাজারবাগ শরীফের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে যথাযথো ব্যবস্থা নেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধে রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলার সক্রিয় অবস্থানের কথা আগেই বলা হয়েছে। তার মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময় এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থেকেছে। ১৯৯০ সালে যুদ্ধাপরাধীদের চ্যালেঞ্জ করে এবং ১ লাখ টাকার পুরস্কার ঘোষণা করে রাজারবাগ শরীফ থেকে বই প্রকাশিত হয়। যুদ্ধাপরাধী, মৌলবাদ, সন্ত্রাসবাদসহ তাবৎ ধর্মব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে লেখা হয়। এছাড়া সন্ত্রাসবাদ ও যুদ্ধাপরাধবিরোধী লেখা নিয়মিত ছাপা হয়।

তারা বলেন, ১৯৯১ সালে মাসিক আল বাইয়্যিনাত প্রকাশিত হলে ১২তম সংখ্যায়ই অর্থাৎ ১৯৯৩ সংখ্যায়ই যুদ্ধাপরাধী রাজাকারদের রাজনীতি নিষিদ্ধ এবং তাদের বিচারের দাবী জানানো হয়। এরপর জোটভূক্ত কথিত ইসলামী নেতা সাইকুল হাদীছ, চরমোনাই ফজলুর করীম গং তথা নামধারী ইসলামী নেতা ও তাদের ধর্মব্যবসায়ী রাজনীতির বিরুদ্ধে অনবরত লেখা লেখা হয়।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৯৬ সালে দৈনিক আল ইহসান প্রকাশিত হলে একইভাবে যুদ্ধাপরাধ, সন্ত্রাসবাদবিরোধী, মৌলবাদবিরোধী প্রচারণা চালানো হয়। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পূর্বে ‘ইসলামের নামে ভোট দেয়া নাজায়েজ’ ‘যারা ইসলামের নামে ভোট চায় তারা ধর্মব্যবসায়ী’ সার্বিক ব্যানার হেডলাইন করে বার বার প্রচার করা হয়। সারাদেশেও প্রচার করা হয়। যুদ্ধাপরাধী গো আযম, মইত্যা রাজারকা, মইজ্জা রাজাকার ইত্যাদির বিরুদ্ধে বিশেষ ক্রোড়পত্র ছাপা হয়। সারাদেশে যুদ্ধাপরাধী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে এবং যুদ্ধাপরাধের বিচারের পক্ষেও অসংখ্যবার পোস্টারিং করা হয়।

বক্তারা বলেন, অতীতে দেইল্লা রাজাকার রাজারবাগ শরীফের বিরুদ্ধে জঙ্গী অপবাদ দিয়েছিলো। আজকে মিডিয়া ও প্রশাসনে ঘাপটি মেরে থাকা দেইল্লা রাজাকারের বংশধররা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে।রাজারবাগ শরীফ এর পীর ছাহেবের জঙ্গীবাদের সহিত সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রমাণিত হয় না। তাহাকে শত্রুতাবশতঃ জঙ্গীবাদের সহিত সম্পৃক্ততার অপবাদ দিয়া অপপ্রচার চালানো হয়েছে।

বক্তারা বলেন, স্থানীয় সাংসদ জনাব রাশেদ খান মেনন ও কমিশনার জঙ্গীবাদ-জামাতবিরোধী অবস্থানের জন্য সব সময় ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাদের কাছে এযাবত রাজারবাগ দরবার শরীফের বিরুদ্ধে তাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসে নাই। মিডিয়ায় অনুপ্রবেশ করা এসব জামাতী রিপোর্টাররাই রাজারবাগ শরীফ সম্পর্কে অব্যাহত মিডিয়া ক্যু চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকী তারা হাইকোর্ট এবং আইনমন্ত্রীর নামেও রাজারবাগ শরীফকে জড়িয়ে মিথ্যাচার করে মিডিয়া ক্যু করে যাচ্ছে। এনটিভি, সহ বিভিন্ন মিডিয়ায় গত ৫ অক্টোবর নিউজ হেডিং করা হয়েছে, ‘রাজারবাগ পীরের সব আস্তানা বন্ধের নির্দেশ হাইকোর্টের’। অথচ বাস্তবিকপক্ষে এরকম কোনো নির্দেশই দেয়নি হাইকোর্ট। একইভাবে তারা গত ১০ অক্টোবর ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে আইনমন্ত্রীর এক অনুষ্ঠানের বরাত দিয়ে রাজারবাগ শরীফের বিরুদ্ধে নিউজ করেছে যে, ‘রাজারবাগ পীরের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার হুশিয়ারী আইনমন্ত্রীর’। অথচ এই নিউজের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে আইনমন্ত্রী নিজেই বলেছেন তিনি রাজারবাগ শরীফ নিয়ে এরকম কোনো বক্তব্য দেননি। বক্তারা বলেন, কোথাও নিউজ হচ্ছে ৪৯ মামলা, কোথাও ৮০০ মামলা। কোথাও ৭ হাজার একর, কোথাও নিউজ হচ্ছে ৬ হাজার একর, কোথাও ৩ হাজার একর, আবার কোথাওবা ১ হাজার একর জমি দখল। মূলত এসব তথ্য বৈপরীত্যই প্রমান করে যে, এ সবই জঙ্গী-জামাতবিরোধী শতভাগ সুন্নতী আমলের হক্ব দরবার শরীফ রাজারবাগ শরীফের বিরুদ্ধে অব্যাহত মিডিয়া ক্যু।

বক্তারা বলেন, রাজারবাগ দরবার শরীফ সম্পর্কে সি.আই.ডির মত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে কিভাবে মিথ্যা রিপোর্ট দিতে পারলো তা ভাবতেও অবাক লাগে। সি.আই.ডি রিপোর্ট দিয়েছে, রাজারবাগ দরবার শরীফের পেছনে ৩ শতাংশ জমির উপর তিনতলা বাড়ি দখলের জন্য কাঞ্চনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। অথচ প্রকৃত সত্য হলো, রাজারবাগ দরবার শরীফের পেছনে ৩ শতক জায়গায় কোনো বাড়িও নেই এবং কোনো ৩ তলা বিল্ডিংও নেই। এরূপ মিথ্যা তথ্য রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা সি.আই.ডি কি করে হাইকোর্টে প্রেরণ করতে পারলো এটা তদন্তের জন্য আমরা মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, রাজারবাগ শরীফ সম্পর্কে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যে রিপোর্ট দিয়েছে সেটাই বর্তমান পৃথিবীতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে বড় উদাহরণ। কারণ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সম্পূর্ণ রিপোর্টে কোথাও রাজারবাগ শরীফের কোনো বক্তব্য নেই, রাজারবাগ শরীফের সাথে কোনো যোগাযোগ করা হয়নি এবং কোনো জিজ্ঞাসাও করা হয়নি, আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ দেয়া হয়নি।

সমাবেশে বক্তাদের তরফ থেকে রাজারবাগ শরীফের বিরুদ্ধে মিডিয়া ক্যু ও মিথ্যা প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে মাননীয় তথ্যমন্ত্রী, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বিশেষত, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।

মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জাতীয় মসজিদ বাইতুল মোকাররম মসজিদের প্রধান মুয়াজ্জিন আলহাজ্জ্ব মাওলানা ক্বারী কাজী মাসউদুর রহমান, সম্মিলিত ইসলামী গবেষণা পরিষদের সভাপতি হাফেজ মাও: আ: সাত্তার, বাংলাদেশ ওলামা লীগের সেক্রেটারী আলহাজ্জ্ব মাও: আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আল্লামা শোয়াইব আহমদ। আরও উপস্থিত ছিলেন, আব্দুস সবুর কাঞ্চনপুরী, মুহম্মদ আল আমিন কুরাইশী, মাওলানা মোকাম্মেল হোসেন, মাওলানা রফিকুল আলম সিদ্দিকী আল কুরাইশী, মাওলানা সৈয়দ ওমর ফারুকসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বিবিত ১৩টি সমমনা দলের নেতৃবৃন্দ।




আরো পড়ুন