রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছেন যে রাশিয়া এবং ভিয়েতনামের মধ্যে ৬০ শতাংশেরও বেশি বাণিজ্য এখন মার্কিন ডলার এবং ইউরো ব্যবহার না করেই পরিচালিত হচ্ছে। এই পদক্ষেপটি রাশিয়ার দীর্ঘদিনের ডি-ডলারাইজেশন কৌশলের অংশ, যা পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়া হিসাবে শুরু হয়েছিল।
পুতিন বলেন, “আমরা আমাদের বাণিজ্যিক লেনদেনগুলোতে জাতীয় মুদ্রার ব্যবহার বাড়াচ্ছি এবং এতে সফল হচ্ছি। রাশিয়া এবং ভিয়েতনামের মধ্যে বর্তমানে ৬০ শতাংশেরও বেশি বাণিজ্য মার্কিন ডলার এবং ইউরো ছাড়াই পরিচালিত হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “আমাদের লক্ষ্য জাতীয় মুদ্রায় বাণিজ্যিক লেনদেনের পরিমাণ আরও বাড়ানো এবং এই প্রচেষ্টা চলমান থাকবে।”
রাশিয়ার এই ডি-ডলারাইজেশন কৌশলটি মূলত ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া সংযোজনের পর পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় শুরু হয়েছিল। রাশিয়া তখন থেকে ডলার এবং ইউরোর উপর নির্ভরতা কমানোর জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে আসছে। পুতিনের মতে, “বিষাক্ত মুদ্রা” হিসেবে বিবেচিত মার্কিন ডলার এবং ইউরোর ব্যবহার হ্রাস করতে রাশিয়া সফল হয়েছে এবং রুবল ও অন্যান্য জাতীয় মুদ্রার ব্যবহার বাড়িয়েছে।
ভিয়েতনাম দীর্ঘদিন ধরে রাশিয়ার সাথে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। বিশেষ করে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম আমদানিতে ভিয়েতনামের রাশিয়ার উপর নির্ভরতা রয়েছে। তবে সম্প্রতি ভিয়েতনাম তাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৈচিত্র্যময় করতে বিভিন্ন দেশের সাথে সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপিত পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার অর্থনীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া ডি-ডলারাইজেশন কৌশল গ্রহণ করেছে এবং অন্যান্য দেশের সাথে জাতীয় মুদ্রায় বাণিজ্য করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভিয়েতনামের সাথে এই বাণিজ্যিক সম্পর্কও এই কৌশলের অংশ হিসেবে দেখা যেতে পারে।
রাশিয়া এবং ভিয়েতনামের মধ্যে জ্বালানি খাতেও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা রয়েছে। রাশিয়ার কোম্পানিগুলি ভিয়েতনামের তেল এবং গ্যাস উন্নয়ন প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। তবে ভিয়েতনাম এখন তার জ্বালানি সরবরাহ বৈচিত্র্যময় করতে এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে মনোনিবেশ করতে চাইছে।
রাশিয়া এবং ভিয়েতনামের মধ্যে বাণিজ্যে মার্কিন ডলার এবং ইউরোর ব্যবহার কমিয়ে আনা রাশিয়ার ডি-ডলারাইজেশন কৌশলের একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। এই পদক্ষেপটি রাশিয়া ও ভিয়েতনামের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও দৃঢ় করতে এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার প্রভাব কমাতে সহায়তা করবে।
এই পদক্ষেপটি রাশিয়া এবং ভিয়েতনামের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের পরিবর্তন এবং রাশিয়ার ডি-ডলারাইজেশন কৌশলের গুরুত্ব তুলে ধরে।