রুশ বাহিনীর হামলার সামনে টিকতেই পারছে না ইউক্রেনের সেনারা। দেশটির ভেতরে ঢুকে একের পর এক এলাকা দখল করে নিচ্ছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে নিজের সব আন্তর্জাতিক সফর স্থগিত করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। বুধবার (১৫ মে) দ্য পলিটিকোর এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউক্রেনের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের এলাকা খারকিভে ঢুকে পড়েছে রুশ সেনারা। শুক্রবার ভোরে তারা এলাকাটিতে ঢুকে পড়ে। এরপর একের নপর এক অঞ্চল দখল করে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে রুশ বাহিনী। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের দপ্তর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিজের সব বিদেশ সফর স্থগিত করেছেন জেলেনস্কি। বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী কয়েকদিন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিসহ অন্যদের যেসব আন্তর্জাতিক সফর ছিল তা স্থগিত করা হলো। এসব সফর পুনর্নির্ধারণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এর আগে গতকাল ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান কায়রাইলো বুদানোভ সিএনএনকে জানান, খারকিভের সম্মুখভাগের পরিস্থিতি খারাপ হয়ে পড়েছে। তার এমন বক্তব্যের পর প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বিবিসি জানিয়েছে, রুশ বাহিনীর হামলার মুখে টিকতে পারছে না ইউক্রেনের সেনারা। এজন্য খারকিভে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কয়েকটি গ্রাম থেকে ইউক্রেনের সেনাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
দেশটির সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেন, সেনারা তীব্র হামলার মুখে পড়েছে। তাদের সুবিধাজনক স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া দেশটির পুলিশপ্রধান খারকিভের ভোভাচানস্ক এবং লুকিয়ান্তসি থেকে সব মানুষকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেছেন।
এর আগে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাশিয়ার কাছে চরম নাস্তানাবুদ হওয়ায় পশ্চিমা মিত্রদের কাছে জরুরি সামরিক সহায়তার আবেদন জানায় ইউক্রেন। জেলেনস্কির আশঙ্কা পশ্চিমা সহায়তা না পেলে চলতি বছরের মধ্যেই যুদ্ধে হেরে যেতে পারে কিয়েভ, এমনকি হারাতে পারে বিস্তৃত ভূখণ্ড।
এর পরেই কিয়েভের জন্য ৬১ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন করে যুক্তরাষ্ট্র। তারপরও প্রশ্ন উঠেছে এই সহায়তা কি ইউক্রেনকে রক্ষা করতে পারবে?
তবে বাস্তবতা হচ্ছে- পশ্চিমা বিশ্বকে সঙ্গে নিয়েও এক পুতিনের বিরুদ্ধে খুব বেশি সুবিধা করে উঠতে পারছেন না প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। এমন পরিস্থিতিতে কিয়েভকে টিকিয়ে রাখতে নতুন করে ৬১ বিলিয়ন ডলারের বিশাল মার্কিন সামরিক সহায়তা কিছুটা সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে।
যদিও সিআইএ পরিচালক উইলিয়াম বার্নস মনে করেন, ‘ইউক্রেন এ মুহূর্তে যুদ্ধক্ষেত্রে একটি সংকটজনক অবস্থানে রয়েছে এবং বছরের শেষ নাগাদ যুদ্ধে হেরে যেতে’। সম্প্রতি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রসঙ্গত, টানা তিন বছর পরাশক্তি রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নভুক্ত রাষ্ট্র ইউক্রেন। আর এর পেছনে সবচেয়ে বড় মদদদাতা হিসেবে কাজ করছে যুক্তরাষ্ট্র ও সামরিক জোট ন্যাটো।