প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার শ্রীলঙ্কাকে বাংলাদেশে বিশেষত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে আরো বেশি বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল উন্নয়ন করছে এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিদ্যমান অনুকূল নীতিমালা গ্রহণ করে শ্রীলঙ্কার উদ্যোক্তারা এখানে আরও বেশি বিনিয়োগ করতে পারবেন।’
শ্রীলঙ্কার নবনিযুক্ত হাই কমিশনার সুদর্শন দীপাল সুরেশ সেনেভির্তনে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এই আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
হাই কমিশনার বলেছেন, তার দেশ বাংলাদেশের বিমান চলাচল এবং স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষণে সহযোগিতার পাশাপাশি শিপিং, হাসপাতাল, পর্যটন, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক খাতে কাজ করতে এবং বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের প্রশংসা করে তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে তার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশ অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে। আরও বিনিয়োগ বাংলাদেশে আসা উচিত, বলেন রাষ্ট্রদূত।
তিনি বলেন, সমুদ্রে প্রমোদতরী প্রবর্তনের পাশাপাশি বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা সাংস্কৃতিক পর্যটন বিকাশে তার দেশ উপকূলীয় অঞ্চলে পর্যটন অবকাঠামো স্থাপন করতে চায়।
হাই কমিশনার কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বাংলাদেশের করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণে বিস্ময় প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারিটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে কারণ তার সরকার সচেতনতা তৈরি করার চেষ্টা করেছে যাতে লোকেরা করোনাভাইরাস সম্পর্কে সতর্ক থাকে।
শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রদূত এই ভ্যাকসিন পাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কারণ সরকার দেশের জনসাধারণের পাশাপাশি কূটনীতিক এবং বিদেশিদেরও টিকা দিচ্ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে অটিজমের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় সায়মা ওয়াজেদ হোসেনকে অভিনন্দন জানিয়ে হাই কমিশনার বলেছেন, অটিজম ক্ষেত্রে তার কাজ প্রশংসনীয়।
অটিজমের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাথে শ্রীলঙ্কা কাজ করতে চায়, বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সামাজিকভাবে পিতামাতা এটিকে লজ্জাজনক মনে করে এবং তারা তাদের অটিস্টিক বাচ্চাদের বাইরে আনতে চায় না। সরকার এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে যদিও এটি একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ কারণ অনেক শিক্ষিত পরিবারও তাদের অটিস্টিক শিশুদের আড়াল করার চেষ্টা করে।
আমরা অটিস্টিক ও শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী মানুষ এবং তাদের শিশুদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ ও সহায়তা প্রদান করছি,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
হাই কমিশনার সামাজিক সুরক্ষা নেট প্রোগ্রাম থেকে প্রান্তিক মানুষের কাছে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থকে ‘যুগোপযোগী’ হিসাবে আদান প্রদানের উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন।
ছাত্র জীবনের স্মৃতি স্মরণ করে তিনি বলেন, দিল্লিতে অধ্যয়নকালে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে সমর্থন দেয়ার চেষ্টা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য হাই কমিশনারকে ধন্যবাদ জানান।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এবং প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরী এসময় উপস্থিত ছিলেন।