চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহনের সিদ্ধান্তের পর হল খুলে দেওয়ার দাবিতে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্রীরা। সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘শহীদ জননী জাহানারা ইমাম হল’ এবং ‘বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হল’ এর প্রায় ২৭০ জন ছাত্রীর স্বাক্ষর সংবলিত এই স্মারকলিপিটি জমা দেওয়া হয়।
স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন, ‘গত ১৭ই ডিসেম্বর শাবিপ্রবি একাডেমিক কাউন্সিলে, আগামী ১৭ই জানুয়ারি ২০২০ তারিখ থেকে আবাসিক হলগুলো বন্ধ রেখেই অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্স এবং পরবর্তীতে অন্যান্য শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের চূড়ান্ত পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। ফলে অকূল পাথারে পড়ে গেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা, বিশেষত ছাত্রীরা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে সিলেটে পড়াশোনা করে। বাইরে থেকে আসা প্রায় সব মেয়ে শিক্ষার্থীরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে অবস্থান করে। এমতাবস্থায় আবাসিক হল বন্ধ রাখলে শিক্ষার্থীরা নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হবে।’
স্মারকলিপিতে তারা আরোও উল্লেখ করেন, ‘সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী সমাজের খেঁটে খাওয়া এবং নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত বা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই টিউশন বা অন্যান্য কাজের মাধ্যমে নিজেদের পড়াশোনার খরচ চালিয়ে নেয়। কিন্তু সাম্প্রতিক করোনা মহামারিতে দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির কারণে অর্থ উপর্জনের জায়গাগুলো হয়েছে । এমতাবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এরূপ বেপরোয়া সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের সিলেটে এসে মেস/বাসা ভাড়া করে থাকাটা কষ্টসাধ্য ও ব্যায়বহুল।
সামগ্রিক সমস্যার মধ্যে পরীক্ষার কিছুদিন আগে হঠাৎ আবাসন বিষয়ক এরূপ অনিশ্চয়তা এবং সংকট শিক্ষার্থীদের সামনে একটি বিশাল মানসিক চাপ হিসেবে প্রতিপন্ন হয়েছে । তাছাড়া আবাসিক হলগুলো সুপরিকল্পিতভাবে, বিস্তৃত জায়গা জুড়ে থাকার কারণে যেকোন জরুরি অবস্থায় খুব সহজে দূরত্ব বজায় রেখে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবস্থান করা সম্ভব। কিন্তু বিভিন্ন মেস/বাসায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে অবস্থান করা কখনোই সম্ভব নয়। কারণ, একটি ঘিঞ্জি পরিবেশে একাধিক শিক্ষার্থীকে গাদাগাদি করে অবস্থান করতে হয়। নিরাপত্তা এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য আলাদা কোন কর্মীর সুবিধাও সেখানে নেই যা আমরা সবসময় হলগুলোতে পেয়ে থাকি। অর্থাৎ, সামগ্রিক অবস্থা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এই পরিস্থিতিতে আবাসিক হলই শিক্ষার্থীদের একমাত্র উপযুক্ত ও নিরাপদ স্থান।’
স্মারকলিপিতে আবাসিক হলের শিক্ষার্থীরা সকলের সুবিধার্থে পরীক্ষার অন্তত ১৫ দিন আগে আবাসিক হলগুলো খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানান।
উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলে হল বন্ধ রেখেই আগামী ১৭ জানুয়ারি থেকে অনার্স শেষ বর্ষ ও মাস্টার্স এর চূড়ান্ত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।